বলদা গার্ডেনে অসমাজিক কাজের মহোসৎব, নিষিদ্ধ টিভি ক্যামেরা! ঢাকায় আর নেই ফাঁকা কোন জায়গা। মন চাইলেই যে একটু অবসরে প্রিয় জনকে নিয়ে মনখুলে ঘুরে বেড়াবেন, একান্তে সময় কাটাবেন তা বলতে গেলে অসম্ভব।
উন্মুক্ত পরিবেশ আর যথোপযুক্ত স্থান না পাওয়ায় তরুণ-তরুণীরা প্রেমের স্বাদ মিটাতে ছুটে যাচ্ছেন বলদা, রমনা, বোটানিক্যাল গার্ডেনসহ আরো কয়েকটি পার্কে।
এমনই একটি পার্কের নাম বলদা গার্ডেন। রাজধানী ঢাকার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অংশ পুরান ঢাকা। যা আসল ঢাকা নামেই পরিচিত। আর এ পুরান ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য ঐতিহাসিক নিদর্শন। পুরান ঢাকার এরকম একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন হচ্ছে ওয়ারীর বলধা গার্ডেন।
যা ঢাকা তথা বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত উদ্যানগুলোর মধ্যে অন্যতম। অথচ এক শ্রেণীর অসাধু ব্যক্তিরা বলদা গার্ডেন ব্যবহার করছে অসামাজিক কাছে। হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। যার মধ্যে জড়িত রয়েছে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতা-কর্মী সমর্থকরা।
এই বলদা গার্ডেনে ইতোমধ্যে নিষিদ্ধ করা হয়েছে টিভি ক্যামেরা।
বলদা গার্ডেনের প্রধান ফটকে জোড়ায় জোড়ায় টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে। বয়স কমবেশি সবারই পনের থেকে তিরিশের মধ্যে। ফাঁকে ফাঁকে স্কুল ড্রেসপরা ছাত্র-ছাত্রীরাও।
পেশাগত পরিচয় গোপন করে পার্কে ঢুকে বাঁয়ে যেতেই চোখে পড়লো, হাতে হাত ধরে এক যুবক যুবতীকে চুম্বন করছে। ভেতরে যেতেই ভিরমি খাওয়ার অবস্থা, একি দেখছি। পদ্মদিঘীর পাড় ঘেঁষে, শতায়ূ উদ্ভিদের আড়ালে, গোলাপ বাগানে, আঙুর বাগানের পেছনে, বাঁশ ঝাড়ের আড়ালে অন্তত অর্ধশত জোড়া তরুণ-তরুণী উন্মুক্ত হাওয়ায় নিজেদের বিলিয়ে দিচ্ছে। এ যেন সানি লিওনের নিষিদ্ধ প্রেম খেলায় মত্ত তরুণ-তরুণীরা! দেখে মনে হচ্ছে পর্নো তারকা সানি লিওনকেও অভিনয়ে হার মানাবেন এসব প্রমিক যুগল।
একে অন্যের গায়ে এলিয়ে লুটিয়ে পড়ছে। প্রেমিক কপালে চুম্বন আঁকছে। কেউবা আবার উরুতে মাথা রেখে বাদাম চিবোচ্ছে। বুকে জড়িয়ে আছে।
একা পার্কের কোথায় হাঁটাচলা যেন অপরাধতুল্য। পুরো দশ মিনিটের হাঁটায় পার্কে এক চক্কর দিতেই চোখ পড়লো নিরাপদ এই প্রেমলীলা কেন্দ্রের নানা দৃশ্য।
প্রিয়জনকে নিয়ে অন্য খেলায় মত্ত বলদা গার্ডেনে দর্শনাথীরা। ক্যাকটাস বাগানের লম্বা পথের দু’ধারে দৃশ্য দেখলে মনে হবে কোন পরিচালকের স্ক্রিপ্ট মিলিয়ে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয় করছে পার্কে আসা কুশীলবরা।
ক্যামেরায় ধারণ করতে হবে বাণিজ্যিক এ দৃশ্য। আরেকটু কাছে। আরও নিবিড়ভাবে। হচ্ছে না। আরও একবার। তবে এই দৃশ্য বাণিজ্যিক কোন সিনেমাতে সংযোজন করা হলে পর্নো অভিনেত্রী সানি লিওন-এর ছবিকেও হার মানাবে এটা নিশ্চিত বলতে পারি।
এমনকি প্রেমিক তার প্রেমিকাকে চুমু খেতে রাজি হচ্ছে না, এরপরও জোর করেই প্রেমিকের ঠোঁটে মুখে চুম্বনের আঁচর দিয়ে নতুন উন্মত্ততায় মজে থাকেন অনেকেই।
এ দৃশ্য বর্ণনা পুরনো ঢাকার বলদা গার্ডেনের। যেখানে ভিড় করে আছে ৬৭২ ধরনের নানান ফলদ, বনজ, ঔষধি বৃক্ষ। চিরচেনা রাজধানীর বুকে প্রকৃতিপ্রেমিক জমিদার নরেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী ১৯০৯ সালে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে তুলেন এ পার্ক। আর এটির এই অবস্থা।
সাবধান বাণী:
প্রিয়জনকে নিয়ে অন্য এক খেলায় মত্ত বলদা গার্ডেনে দর্শনাথীদেরকে বলদ বানাতেই আমাদের পাঁচ জোড়া চোখ আর চারটি বিভিন্ন ধরণের গোপন ক্যামেরায় তুলে আনার চেষ্টা করা হয়েছে। বলদা গার্ডেনের অসামাজিক কাজে লিপ্ত বলদ দর্শনার্থীদের এমন ছবি আমরা ধারাবাহিকভাবে প্রচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শুধু বলদা গার্ডেনই নয়, রমনা, বোটানিক্যালসহ আরো কয়েকটি পার্কের এ ধরণের হীন অবস্থা অচিরেই পাবেন। ইতোমধ্যে আমাদের ক্যামেরায় উঠে এসেছে নানা বয়সি প্রেমিক প্রেমিকার নানা ঢংয়ের নানা চিত্র। তবে সাবধান যদি অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকেন তবে আপনিও বাদ পড়ছেন না। আর এই বলদা গার্ডেনের দায়িত্বে থাকা মানুষগুলো আপনাকে বানাচ্ছে বলদ। তাই সাবধান! সাবধান অসামাজিক কাজ থেকে!
0 Comments