বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থা ভারতের রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং ‘র’। বিশেষ করে এর আঞ্চলিক প্রভাবের কারনে এটা একটি আলোচিত গোয়েন্দা প্রতিষ্ঠান। জেনে নিন প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য।
১) ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ভারতের এই ফরেন ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি। ইন্দিরা গান্ধী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীনই গড়ে তোলা হয় এই সংস্থা। মূলত চীন ও পাকিস্তানের যুদ্ধের পরেই এমন একটি সংস্থা তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
২) প্রথমদিকে সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং রাজস্ব দপ্তর থেকে ‘র’ এর সদস্য নিযুক্ত হতো। পরবর্তীতে বিভিন্ন শাখায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টপ স্কোরারদের নিয়োগ করা শুরু হয়। কারণ এই সংস্থার কাজকর্মের অনেকটা অংশ জুড়ে রয়েছে বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক গবেষণা।
৩) ‘র’ কিন্তু যেকোনো সংসদের কোনো প্রশ্নের উত্তর নাও দিতে পারে। এই বিশেষ সংস্থার ক্ষেত্রে তাই এদেশের ‘রাইট টু ইনফরমেশন অ্যাক্ট’ কার্যকরী নয়। দেশের সুরক্ষা এবং তথ্যের গোপনীয়তা বজায় রাখার জন্যেই এই ব্যবস্থা।
৪) ‘র’ সেক্রেটারি জয়েন্ট ইনটেলিজেন্স কমিটির সদস্য। এই কমিটি সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে রিপোর্ট করে। আবার ‘র’ সেক্রেটারিও সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে রিপোর্ট করেন।
৫) ‘র’-এর মূল পাঁচটি বিভাগ রয়েছে এবং প্রত্যেকটির মাথায় একজন জয়েন্ট সেক্রেটারি রয়েছেন দায়িত্বে। এই অঞ্চলগুলো হল— পাকিস্তান, চীন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, অন্যান্য দেশ এবং অন্তর্বর্তী সুরক্ষা।
৬) প্রধান দপ্তর দিল্লিতে এবং এই মুহূর্তে সংস্থার চিফ হলেন রাজিন্দর খান্না।
৭) সংস্থায় নিয়োগের পর প্রত্যেককে দুভাগে ট্রেনিং দেওয়া হয়। বেসিক ট্রেনিংটি ১০ দিনের যেখানে সংস্থার কাজকর্ম, সংস্থার নিরাপত্তা, বিজ্ঞান ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে সাধারণ ধারণা তৈরি করা হয়। পরের ফিল্ড ট্রেনিংটি চলে ২ বছর। সিনিয়র অফিসারদের তত্ত্বাবধানেই হয় এই ট্রেনিং।
৮) ২০০৪ সালে ‘র’-এর জয়েন্ট সেক্রেটারি রবিন্দর সিং হঠাৎই দিল্লি থেকে নজরবন্দি থাকা অবস্থাতেই উধাও হয়ে যান। পরে জানা যায়, তিনি আসলে মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ-র হয়ে কাজ করছিলেন।
৯) গুপ্তচর ছাড়াও ‘র’-তে কাজ করেন বিভিন্ন ভাষার অনুবাদক, গণিতজ্ঞ, সংখ্যাতত্ত্ববিদ, অ্যানালিস্ট ও তথ্যপ্রযুক্তিবিদ।
১০) ‘র’-এর চাকরির জন্য আবেদন করতে গেলে অতীতে কোনো পুলিশ রেকর্ড থাকা চলবে না এবং অবশ্যই ভারতীয় নাগরিক হতে হবে। এ ছাড়া ড্রাগসেবনের অভ্যাস থাকলে আবেদন বাতিল হয়ে যাবে। যেকোনো চাকরি প্রার্থীর পরিবার, মানসিক স্বাস্থ্য, রাজনৈতিক মতাদর্শ, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ঋণের পরিমাণ ও ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে যাবতীয় খোঁজখবর নিয়ে তবেই আবেদন খতিয়ে দেখা হয়।
0 Comments